• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

সিআরবির শিরীষ তলায় শুরু হচ্ছে চসিক আয়োজিত “অমর একুশে ”বইমেলা ২০২৪

  • প্রকাশিত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

শুরু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত অমর একুশে বই মেলা ।  আগামী ৯ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বিকাল তিনটায় নগরের ফুসফুস খ্যাত অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত এলাকা সিআরবিতে এই অমর একুশে বই মেলার শুভ উদ্বোধন করা হবে এবং  মাসব্যপি যা মার্চ মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত চলবে ।  বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারী) অমর একুশে বই মেলা ২০২৪ ইং উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং লেখকদের সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত বই মেলায় এবার প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ও ছুটির দিন সকাল দশটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

মেয়র বলেন, ৪৩ হাজার বর্গফুটের সুবিশাল সিআরবির শিরীষ তলার মাঠ জুড়ে মোট ১৫৫টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  এরমধ্যে ডাবল স্টল ৭৮টি এবং সিঙ্গেল স্টল ৭৭টি।  চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকার সৃজনশীল অভিজাত প্রকাশনী সংস্থা গুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে এবং তাদেরকে স্টলও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ মোট ৯২টি প্রকাশনা সংস্থা মেলায় অংশ নিচ্ছেন।

প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় থাকবে দৃষ্টিনন্দন “বঙ্গবব্ধু কর্নার“, লেখক আড্ডাসহ নারী কর্ণার, ওয়াইফাই জোন।  এছাড়াও নিরাপত্তার স্বার্থে পুরা মেলা প্রাঙ্গন সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত থাকবে।  মেলা কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে ।

মাসব্যাপী বইমেলার অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে- ররীন্দ্র উৎসব, নজরুল উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কবিতা উৎসব, মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারির আলোচনা, লোক উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, পেশাজীবি সমাবেশ, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রতিদিনের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় দেশের প্রথিতযশা লেখক-কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন।

এছাড়াও মেলা মঞ্চে প্রতিদিন শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন, রবীন্দ্র-নজরুল-(লোক সঙ্গীত, সাধারণ নৃত্য, লোক নৃত্য, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, দেশের গানের আযোজন করা হবে। মেলাকে আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের লেখক, সাহিত্যিক, সংস্কৃতি কর্মী ও বইপ্রেমীদের নিয়ে বিভিন্ন উপ-পরিষদ গঠন করা হয়েছে। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী ও দেশাত্ববোধক গান পরিবেশিত হবে। এছাড়াও জাতীয় জীবনে যেসব ব্যক্তি কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের একুশে সম্মাননা স্মারক পদক ও সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হবে।

মেয়র বলেন, আশা করি এই মেলায় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের লেখক পাঠক ও সৃজনশীল নাগরিকদের অংশগ্রহণে সংস্কৃতি ও মননের উৎকর্ষের পাশাপাশি ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটবে।  পুলিশের পাশাপাশি মেলার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বেসরকারি পেশাদার একটি নিরাপত্তা সংস্থা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।

প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় থাকছে- নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ ও সেলফি কর্ণার।  এছাড়াও নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য ৫২'র ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনের উপর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা । মেলার সার্বিক দিক মনিটরিংয়ের জন্য মেলা পরিষদের কক্ষ, মেলার মিডিয়া উপ কমিটিসহ সাংবাদিকদের জন্য সুপরিসর মিডিয়া সেন্টার, হেলথ কর্নার, ফায়ার সার্ভিস, অভ্যর্থনা কক্ষ, বিটিভির বুথ , এটিএম ব্যাংকের বুথসহ সার্বক্ষণিক সেবা ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের সার্ভিস বুথ থাকবে। 

সিআরবিতে বইমেলা আয়োজনের জন্য স্থান বরাদ্দ দেয়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেকেই আজকাল মোবাইলে ও মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। সময় অর্থ, স্বাস্থ্য সবই শেষ করছে এর পেছনে।  এতে তারা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  বই অন্যতম বন্ধু যা তাদের মোবাইল ও মাদকের আসক্তি থেকে বের করে সৃজনশীল মেধাবী প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।  এক্ষেত্রে মা-বাবা, শিক্ষক ও সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

তাই বইমেলা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে, এ মেলার প্রচার প্রসারের সার্থকতায় সাংবাদিক সমাজের সহযোগিতা বিশেষ ভূমিকা রাখার  এবং পাঠক সমাজ, বইপ্রেমী, সুধীজন, সুহৃদ, তরুণ সমাজ, যুব সমাজসহ সব বয়সী সর্বস্তরের শ্রেণি পেশার মানুষকে সপরিবারে বন্ধু-বান্ধবসহ মেলায় আসার জন্য আহ্বান জানান।  উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, বইমেলার আহ্বায়ক ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সদস্যসচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নীপু, সংস্কৃতি সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ, কবি কামরুল হাসান বাদল, সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি সাহাবউদ্দিন হাসান বাবু,  প্রজ্ঞালোকের প্রকাশক রেহানা চৌধুরী, আশেক রসুল চৌধুরী টিপু। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads